DHAKA, 8 January 2017. Bangladesh Khelafat Andolon 10 member delegation led by Hazrat Shah Ataullah ibn Hafezzee Huzur today met in dialogue in Bongobhaban with the Honorable President of the People's Republic of Bangladesh Mr. Advocate Abdul Hamid
রাষ্ট্রপতির সাথে খেলাফত আন্দোলনের সংলাপ অনুষ্ঠিত
সংলাপে লিখিত বক্তব্য
ও প্রস্তাবাবলি
০৮/০১/২০১৭
মহামান্য রাষ্ট্রপতি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়
বঙ্গভবন, ঢাকা।
মুহতারাম!
মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন,
আহকামুল হাকিমীনের অসংখ্য শুকরিয়া আদায় শেষে আপনাকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন
ও মোবারকবাদ যে,আপনি নির্বাচন কমিশন
গঠনের ক্ষেত্রে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের মহান উদ্যোগ গ্রহণ করতঃ বাংলাদেশ
খেলাফত আন্দোলনকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন। আমরা ঐ সকল বীরমুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সাথে
স্মরণ করছি ও তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি যারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করা এবং দেশের
জনগণের ন্যায্য ও সাংবিধানিক অধিকার, গণতন্ত্র, সাম্য ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে
জীবন উৎসর্গ করেছেন।
আপনি আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি,রাষ্ট্রের অভিভাবক তথা
গোটা জাতির মুরুব্বী। আপনি এখন কোনো দলীয় ব্যক্তিত্ব নন। তাই আশা করি আপনি আমাদের কথা
আন্তরিকতার সাথে শুনবেন এবং সুবিবেচনায় রাখবেন। সময়োপযোগী ঐতিহাসিক এ সংলাপে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট ও পরস্পরের
সংঘাত-অবিশ্বাস হ্রাস পাবে এবং গুণগত পরির্বতনের দারও উন্মুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি!
দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের কারণ অবাধ,
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য
নির্বাচন না হওয়া। এতে গণতান্ত্রিক রাজনীতি যেমন বিপন্ন হয়ে পড়েছে তেমনি আর্ন্তজাতিকভাবেও
বাংলাদেশের ভাবমর্যাদার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই অব¯হা থেকে উত্তরণের জন্য একটি শক্তিশালী,
সক্ষম, নিরপেক্ষ, দক্ষ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা আবশ্যক। যে নির্বাচন
কমিশন প্রত্যাশিত নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হবে এবং তার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা
ও সংকটের অবসান ঘটবে। এ জন্য গোটা জাতি এখন তাকিয়ে আছে রাষ্ট্রের অভিভাবক মহমান্য রাষ্ট্রপতির
কার্যকর ভূমিকার দিকে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রস্তাবাবলি
১। নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত একটি আইন করার যে নির্দেশনা সংবিধানে আছে, সে অনুযায়ী আজ ৪৫বছরেও কোনো স্থায়ী আইন করা হয়নি। আইন
হলে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কখনো বির্তক হতো না । নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের অনুপস্থিতিতে
সার্চ কমিটি গঠন করতে হচ্ছ্।ে সার্চ কমিটি দল নিরপেক্ষ ব্যক্তি না হলে দলনিরপেক্ষ নির্বাচন
কমিশন গঠন করা সম্ভব নয়।
অতএব দেশ ও জাতির স্বার্থে অবাধ, সুষ্ঠু, অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্যে সকল দলের ঐক্যমতের
ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি স্থায়ী আইন
প্রণয়ন করা সময়ের দাবী।
২। সৎ, নিষ্ঠাবান, যোগ্যতাসম্পন্ন এবং নিরপেক্ষ- নির্দলীয় ব্যক্তির সমন্বয়ে
নির্বাচন কমিশন গঠন করা। কমিশনারগণ ব্যক্তিগতভাবে কোন দলের হলেও নীতিগতভাবে আল্লাহ
ভীরু, দৃঢ়চেতা, সৎ, ইনসাফ পছন্দ ও ন্যায়-নীতি
পরায়ন হওয়া অতীব জরুরী। এমন গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আপনার দূরদর্শিতায় সংবিধান
মতে কমিশন গঠন করবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
৩। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশনে অনুর্ধ
৫ জন কমিশনার আবশ্যক, তন্মধ্যে একজন শুধু নির্বাচনী
মামলা মোকাদ্দমা নিষ্পত্তি করবেন। যাতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারীদের ভোগান্তির শিকার
হতে না হয়।
৪। নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনে সাধারণত সবাই নতুন থাকেন। যাদের নির্বাচন বিষয়ে
পূর্ব অভিজ্ঞ থাকে না। তাই একাধিক ধাপে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেয়া। এতে নির্বাচন কমিশনের
ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে এবং পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।
৫। নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রত্যয়ে মহাজোটের প্রস্তাবে একজন, ২০ দলীয় জোটের প্রস্তাবে একজন আর ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও
আলেমদের প্রস্তাবে একজন - এইতিনজন এবং প্রধান কমিশনারসহ দু’জন আপনার পছন্দমত নিরপেক্ষ
কমিশনার মনোনীত করা যেতে পারে।
৬। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের মত বাংলাদেশেও যেন নির্বাচন কমিশন বাস্তবই
স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজ দায়িত্ব পালনে সক্ষম
হয়।
৭। নির্বাচনে ধর্ম বিদ্বেষী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালোটাকার মালিক, অবৈধ সম্পদকে বৈধকারী, খুনি, সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী এবং ঋণখেলাপীদের সাথে
জড়িত পরিবারবর্গকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে, অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকেও, নির্বাচিত হওয়ার পরও যদি মেডিক্যাল টেষ্টে মদ, গাঁজা ফেন্সিডিল, হিরোইন সেবনের প্রামাণ
পাওয়া যায়, তাহলেও তার সদস্যপদ বাতিল
করা উচিত।
৮। বিগত দিনে দেশের বৃহৎ দুটি দলের যৌথ পদক্ষেপে এবং বহু অর্থব্যয়ে “তত্ত্বাবধায়ক
সরকার ব্যবস্থা” প্রবর্তিত হয়েছিল, ফলে জাতির মধ্যে প্রফুল্লতা
এসেছিল, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে
তা বাতিল করায় দেশে রাজনৈতিক সংকট প্রকট হয়েছে,
ক্রমেই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবিশ্বাস বাড়ছে। অতএব আমরা মনে করি গণদাবীর প্রতি শ্রদ্ধা
জানিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের ভিত্তিতে আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূর্ণবহাল করা প্রয়োজন। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন যতই নিরপক্ষ
হোক, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য
নির্বাচন করতে পারবেনা। সম্ভবও নয়।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি!
আমরা আশা করি বর্তমান দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এবং নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খেলাফত
আন্দোলনের প্রস্তাবাবলি সহায়ক হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ সংসদীয় ও নির্বাচনী
অভিজ্ঞতা দূরদর্শী বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কিত বিতর্কের চির অবসান ঘটবে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে দেশ ও জাতির কল্যাণে সঠিক সিদ্ধান্ত
গ্রহণের তৌফিক দান করুন এবং সুস্থতার সাথে আপনাকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন। আমিন, ইয়া রব্বাল আ’লামিন।
মা’আস্সালাম
হাফেজ মাওলানা ক্বারী আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর
আমীরে শরীয়ত (চেয়ারম্যান)
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
-------
নির্বাচন
কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি
নির্ধারণের লক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশগ্রহন এর জন্য বাংলাদেশ
খেলাফত আন্দোলন এর প্রতিনিধিগন
হাফেজ
মাওলানা ক্বারী শাহ আতাউল্লাহ ইবনে
হাফেজ্জী হুজুর
মাওলানা
হাবিবুল্লাহ মিয়াজী
আলহাজ
আনিসুর রহমান জিন্নাহ
মাওলানা
মুজিবুর রহমান হামিদী
মাওলানা
সানাউল্লাহ
মুফতী
সুলতান মহিউদ্দীন
মাওলানা
আব্দুল মান্নান
আলহাজ
মোহাম্মদ জালালুদ্দীন বকুল
মাওলানা
মিনহাজুদ্দীন
এডভোকেট
লিটন চৌধুরী
দলীয়
প্রধান মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে
হাফেজ্জী হুজুররে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুফতী
সুলতান মহিউদ্দীন, সাংবাদিকদরে ব্রিফিং দেন মাওলানা মজিবুর
রহমান হামিদী।