Powered By Blogger

Sunday, November 29, 2015

২৯শে নভেম্বর ২০১৫ বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে

২৯শে নভেম্ব ২০১৫ রোজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকার কামরাঙ্গীরচর নূরিয়া মাদরাসায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ৩৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। বাদ মাগরীব মুনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচী সমাপ্ত হয়।

আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা ক্বারী শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন,  বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মহান বুযুর্গ আমীরে শরীয়ত মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর নির্জন খানকাবাসী হয়েও কলহপূর্ণ রাজনৈতিক ময়দানে কেন অবতীর্ণ হয়েছিলেন, তা আমাদের মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। তিনি রাজত্বের মোহে রাজনীতি করেননি। শুধুমাত্র অপরাজনীতির আগ্রাসনে আমাদের জাতিসত্ত্বাকে সর্বনাশের হাত থেকে রক্ষায় জাতীয় সংশোধনের পদ্ধতি হিসেবে তরীকতে তাসাউফের ফর্মুলায় দেশবাসীকে ভোটের দ্বারা ভোটের তওবার আহবান জানিয়েছিলেন এবং সেই সাথে আমলে সালেহ এর প্রতিযোগিতা হিসেবে আল্লাহর জমীনে আল্লাহর খেলাফত প্রতিষ্ঠার এক জবরদস্ত মেহনত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তিনি বলেছেন, আমার এই আন্দোলন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, আমার এ আন্দোলন হচ্ছে হক্ব ও ইনসাফ তথা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করা।  তিনি ভোটের মাধ্যমে তওবার ভাষ্যপ্রদান প্রসংগে বলেন, ভোটের অর্থ হচ্ছে নীতি ও নেতৃত্বের প্রতি সঠিক বলে একটি সাক্ষী দেয়া অথচ দেখা যাচ্ছে, আমরা নির্বিচারে অপরাজনীতি ও দুর্নীতি পরায়ণ রাজনীতিকদের সঠিক বলে ভোট দিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে মহাপাপ করে চলছি। আর এরই অনিবার্য পরিণাম স্বরূপ দেশ ও জাতি দিনদিন গভীর অরাজকতার মধ্যে নিপতিত হচ্ছে।

খেলাফত আন্দোলনের মহাসচীব মাওলানা মওলানা মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান বলেন, একাধারে আল্লাহর আইন লঙ্ঘন অপরদিকে নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ একটি জাতিসত্ত্বার বিরুদ্ধে খুবই মারাত্মক। আমরা বর্তমানে হানাহানির রাজনীতির এক ধ্বংসাত্মক অবস্থার মুখোমুখি। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ  পেতে অবিলম্বে আমাদেরকে তওবার দিকে ফিরে আমলে সালেহ হিসেবে খেলাফত প্রতিষ্ঠার মেহনতকে জোরদার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশে এখন একদল আরেকদলকে জানে-মালে নিশ্চিহ্ন করতে তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এটা খুবই কুলক্ষণ। ইতিহাস স্বাক্ষী, এভাবেই জাতির স্বাধীনতা হাত ছাড়া হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বিবাদমান সকল পক্ষের মধ্যে আপোষ-সমঝোতা পয়দার লক্ষ্যে আমাদেরকে উদার হয়ে কাজ করতে হবে।

সম্মেলনে বংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সংখ্যালঘু বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সিনিয়র সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে আজ রাজনৈতিক অংগনে চরম অনিশ্চয়তা ও অনাকাংখীত বিভেদ-বিভাজন চলছে। এই নেতিবাচক পরিস্থিতিতে আমি একজন বিশ্বাসী হিন্দু খেলাফত আন্দোলনের মত ইসলামী দল নামে পরিচিত একটি সংগঠনের সংগে একাত্ম হয়েছি – এর গুরুত্ব আপনাদের বুঝতে হবে। খেলাফত আন্দোলন ধন-সম্পদে উপচে পড়েছে এমন কোন সংগঠন নয়। আগামীকাল ভোট হলে পরশু ক্ষমতায় চলে যাবে তেমন কোন পরিস্থিতিও সামনে হাজীর নাই। তা সত্বেও আমি যে খেলাফত আন্দোলনের সংগে আছি এবং খেলাফত আন্দোলনও যে আমার সংগে আছে এর কারণ হচ্ছে আদর্শের ঐক্য। এই আদর্শের মূল কথা হলো আমরা যে যেই ধর্মে বিশ্বাসী হইনা কেন আজ ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সক্রিয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে আমাদের দেশেই শুধু নয়, বরং গোটা দুনিয়ায় নাস্তিকতার নামে শয়তানের রাজত্ব কায়েম হবে।


প্রতিনিধি সম্মেলনে  বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,  জেলা প্রতিনিধি এবং আঞ্চলিক সমন্বয়কারীরা বক্তৃতা করেন ও আলোচনায় অংশগ্রহন করেন।  মফস্বল নেতৃবৃন্দ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ পেশ করেন। খেলাফত আন্দোলনের মহা-সচীব মওলানা মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান সকল অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন; তাঁকে সহায়তা করেন, মওলানা সুলতান মহীউদ্দীন, আযম খান, মুফতি ফখরুল ইসলাম এবং মওলানা মুজীবুর রহমান হামিদী।