১১ই রমজান মোতাবেক ১৭ই জুন ২০১৬ গত শুক্রবার বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে রাজধানীর হোটেল ইম্পেরিয়ালের কনভেনশন সেন্টাতে "অপরাধ মুক্ত রাষ্ট্র গঠনে ক্বোরানের বিধান প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য" শীর্ষক আলোচনাসভা এবং ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইফতার মাহফিলে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা শাহ
আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর বলেন, আত্মশুদ্ধি, সাম্য, সহমর্মিতা ও মানবীয় গুনাবলী সৃষ্টির উদাত্ত
আহবান নিয়েই রহমত, মাগফিরাত
ও নাজাতের মাস পবিত্র রমজান আমাদের কাছে এসেছিল। মুসলিম জাতীয় ঐতিহ্য চেতনায় এবং
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনে রমজান অতি গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাস পবিত্র কুরআন
নাজিলের মাস, ইসলাম
প্রতিষ্ঠার মাস, বিজয়ের মাস।
মুসলমানের দ্বীন ও দুনিয়ার সমৃদ্ধি, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক উন্নতি, দৈহিক ও মানবিক শ্রেষ্ঠত্ব আর গৌরব ও
মর্যাদার অবিস্মরণীয় স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে মাহে রমজান। তিনি অপরাধমুক্ত আদর্শ
রাষ্ট্র গঠনের জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠায় সকলকে
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোরআনের বিধান ও রাসূল সা. এর আদর্শে রাষ্ট্র
পরিচালিত হলে দেশে খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ঘুষ-দূর্নীতি, লুঠপাট ও জুলুম নির্যাতনসহ কোনো ধরনের অপরাধ
থাকবে না। তখনই সত্যিকারের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশে আবার সোনালী যুগ ফিরে
আসবে।
সংগঠনের ঢাকা
মহানগর আমীর ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদীর সভাপতিত্বে
ও সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা আবু তাহেরের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ইফতার
মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক জনাব আলহাজ্ব
আলমগীর মহিউদ্দীন, ইসলামী
ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল
লতিফ নেজামী, খেলাফত
আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ জাফরুল্লাহ খান, খেলাফতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবুল
হাসনাত আমিনী, ইসলামী
আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি
ফয়জুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের
যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা শেখ গোলাম আসগর, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব
মাওলানা জালালুদ্দিন, ইসলামী
বুদ্ধিজীবি ফ্রন্টের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হান্নান আল হাদী, খাদেমুল ইসলাম জামাআতের সেক্রেটারী
জেনারেল মো: নাজমুল হক, খেলাফত
নেতা হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, মুহাম্মদ আজম খান, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজি, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতী আব্দুর রহীম কাসেমী প্রমুখ।
মাওলানা আব্দুল লতিফ
নিজামী বলেন, একটা বৃহত্তর নীলনকশার
অংশ হিসেবে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষানীতি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পালিত
ধর্মের বিপক্ষে এবং একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর অনুকূলে প্রণীত।
নয়া দিগন্তের
সম্পাদক আলহাজ্ব আলমগীর মহিউদ্দীন বলেন, বৃটিশরা এদেশে মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে
বিভক্ত করে দিয়ে আমাদেরকে দুর্বল করে দিয়েছে। আমাদেরকে সাধারণ শিক্ষা এবং ইসলামী
শিক্ষার সমন্বয় করতে হবে। অপরাধ মুক্ত করতে হলে নৈতিকতা সৃষ্টি করা অপরিহার্য।
নৈতিকতা সৃষ্টিতে ধর্ম বিশেষ করে ইসলামে ভুমিকা সবচেয়ে বেশি।
ড. মাওলানা ঈসা
শাহেদী বলেন, জঙ্গি দমন
অভিযানের নামে সারাদেশ থেকে অনেক সাধারণ নিরীহ মানুষ গ্রেফতার হচ্ছে। এতে জনমনে
চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অভিযানে নিরীহ মানুষও হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এধরণের ঘটনায়
তারা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দেশে অব্যাহত হত্যাকান্ড চলছে। এতে
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পুলিশ অফিসারের স্ত্রীসহ বিভিন্ন পেশার
নারী ও পুরুষ হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো হত্যাকা-ের
নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার হয়নি। তারপরও খুনের দায় বিরোধীদের উপর চাপিয়ে প্রকৃত
দোষীদের আড়াল করা হচ্ছে। এসব হত্যাকান্ডের পেছনের মূল শক্তি চিহ্নিত হচ্ছে না ফলে
হত্যাকান্ড ঘটেই চলছে।
সভাপতির বক্তব্যে
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, বাংলাদেশে
হিন্দুদের সুরক্ষায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা রানা দাশ গুপ্ত ও
অভিনেতা পীযুষ বন্দোপধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর হস্তক্ষেপ কামনা করে দেশের
সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এ হস্তক্ষেপ কামনার অর্থ বাংলাদেশে
ভারতের আগ্রাসন চালানো। এমনি পরিস্থিতিতে রামকৃঞ্চ মিশনের ধর্মগুরুকে হত্যার
হুমকির সাথে বাংলাদেশেী হিন্দুদের সুরক্ষার হস্তক্ষেপ কামনার সাথে যোগসূত্র রয়েছে
বলে মনে করি। এ লক্ষ্যে ভারতীয় আগ্রাসন উসকিয়ে দিতে এ উগ্রপন্থি সংগঠনের কেউ রামকৃঞ্চ
মিশনের পুরোহিতকে হত্যার হুমকি দিয়ে থাকতে পারে। সাম্রাজ্যবাদের দালাল
রাষ্ট্রদ্রোহী এ উগ্র সংগঠনের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।