Powered By Blogger

Friday, November 25, 2016

কুনুতে নাজেলা (বাংলা উচ্চারণ)

আল্লাহুম্মাহদিনা ফী মান হাদাইতা ওয়াআফিনা ফীমান আফাইতা ওয়া তাওয়াল্লানা ফী মান তাওয়াল্লাইতা ওয়া বারিকলানা ফীমা আতো আইতা, ওয়াক্বিনা শাররা মা ক্বাজাইতা ফাইন্নাকা তাক্বজি ওয়ালা ইয়ুক্বজা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লা ইয়াজিল্লু মাঁও ওয়ালাইতা ওয়ালা ইয়াইজ্জু মান আদাইতা তাবারাকতা রাব্বানা ওয়া তালাইতা নাস্তাগফিরুকা ওয়ানাতুবু ইলাইকা ওয়াছাল্লাল্লাহু আলান্নাবিয়িল করিম

আল্লাহুম্মাগফিরলানা ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাতি ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি ওয়া আল্লিফ বাইনা কুলুবিহিম ওয়া আছলেহ যাতা বাইনিহিম ওয়ানছুরনা আলা আদুবিকা ওয়া  দুবিহিম

 আল্লাহুম্মাল আনিফ কাফারতা আল্লাজিনা ইয়া ছুদ্দুনা আনছাবিলিক ওয়া ইয়ু কাজ্জিবুনা রুছুলাক ওয়া ইয়ু ক্বাতিলুনা আউলিয়াকা আল্লাহুম্মা খালিক বাইনা কালিমাতিহিম ওয়া জালজ্জিল আক্বদামাহুম ওয়া আনজিল বিহিম বা আছকাল্লাজী লা তারুদ্দুহু আনিল ক্বওমিল মুজরিমিন


সংক্ষিপ্ত ভাবার্থঃ

উপরোক্ত কুনুতে নাজেলা দোয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের নিরাপত্তার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়েছে মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে মিল-মহব্বতের জন্য এবং নিজেদের মধ্যকার কলহ দুরের জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে শত্রুদের উপর বিজয় চাওয়া হয়েছে শত্রুদের শক্তি খর্ব ও তাদের প্রতি আল্লাহপাকের কঠোর শাস্তি কামনা করা হয়েছে

Wednesday, October 12, 2016

Divine Recognition is Enough -Shah Ataullah (Re: Qaumi Madrasa Sanad (certificate) recognition controversy)

PRESS RELEASE

DHAKA, 12 Oct.2016: Bangladesh Khelafat Andolon chief, Ameer-e-Shariat Hazrat Maulana Shah Ataullah Ibne Hafezzee Huzur said, Darul Uloom Deobond since its foundation has been serving the religion for about 150 years with the cooperation of the Muslim nation. Till date Darul Uloom Deobond have not demanded any recognition from the government. But the government voluntarily accorded recognition to the certificate of Deobond. Similarly we (as followers of Deobond) do not seek government recognition. Teachers and students of Qaumi madrasas teach-learn for the sake of Allah’s pleasure, not for seeking employment. Divine recognition is enough for them. Those who seek education for preparing themselves for employment do not enroll as student in Qaumi madrasas; rather from the beginning they choose government controlled madrasas for their education.  We have no objection if the government unconditionally and voluntarily accord recognition to “Qaumi Sanad” (Qaumi madrasa certificate). But any deception in the pretense of recognition will be resisted. Hazrat Hafezzi Huzur (R.A.) used to say “Seeking government recognition tantamount to treachery and deception with Deobondi track”.  For “Qaumi Sanad” we seek neither evaluation nor recognition from the government. Whatever we seek, we seek from Allah. 

On 11 October 2016 Tuesday, Hazrat Shah Ataullah was exchanging his views with the clergies at Jamia Nooria Islamia of Kamrangirchar, Dhaka.

Maulana Ataullah further said, any step or tactic to control Qaumi madras would not be good for the government. We do not want any harm for the government. Hazrat Hafezzi Huzur (R.A.) said, Qaumi madras of this country are fortresses of Islam. Allah Rabbul Alamin has been protecting Islam in our age by His fortresses. Therefore, those who want to harm Allah’s fortresses shall suffer consequences. Qaumi madrasa teachers and students will resist any decision that goes against its track (Debondi Maslak).

Press-release sent by:
Sultan Mohiuddin (Ph: 01916222204, 01819952366)
Central Publicity Secretary

Bangladesh Khelafat Andolon

Wednesday, July 27, 2016

সাক্ষাৎকারে মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর : ইসলামি শিক্ষা ছড়িয়ে দিলে জঙ্গিবাদ ধূলিসাৎ হয়ে যাবে

দৈনিক নয়াদিগন্ত, ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া  ২৭ জুলাই ২০১৬বুধবার

বিশিষ্ট ইসলামি শিক্ষাবিদ হাফেজ মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর মনে করেন, বাংলাদেশে কিছু সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি এখনো সেভাবে খারাপ পর্যায়ে যায়নি। এটার লাগাম টেনে ধরার জন্য সরকারকে কাজ করতে হবে। সরকার এ জন্য শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে অভিযান চালালেই হবে না। এ ক্ষেত্রে আলেমদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করে তাদের পরামর্শ নিতে হবে। জাতীয়ভাবে এই সমস্যা মোকাবেলার কৌশল নিয়ে আগাতে হবে। ইসলামি শিক্ষাকে যদি স্কুল কলেজে ব্যবহার করা হয় তাহলে তরুণরা ইসলাম সম্পর্কে অবহিত হবে তখন তাদের বিভ্রান্ত করা কঠিন হবে। ইসলামি শিক্ষাকে যদি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয় তাহলে এসব অপতৎপরতা এবং ষড়যন্ত্র সব কিছু ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। আলেম-ওলামা তাদের পর্যায়ে সব কিছু করছেন। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে মুসলমানদের স্বার্থে, দেশ-জাতির স্বার্থে  সরকারকেও ইসলামি শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে কাজ করতে হবে। ভাসাভাসা যত চেষ্টা করা হোক না কেন, গোড়ায় না গেলে কোনো কাজ হবে না। পাশাপাশি সরকারকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যারা যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে তাদের মেরে ফেললে হবে না। তাদের ধরে তাদের কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে। সন্দেহের কারণে মেরে ফেললে সমস্যার সমাধান হবে না। এতে নিরীহ মানুষও শিকার হতে পারে। এতে সমস্যা আরো বাড়তে পারে। তাদের মধ্যে জিদ বাড়তে পারে। ভাই ভালোভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে যা করার করতে হবে; না হয় এক দিকে সরকার টিপ দেবে আবার দশ দিক দিয়ে সেটা বের হবেএকটা ছিদ্র বন্ধ করবে, ১০টা ছিদ্র বের  হয়ে যাবে।

হাফেজ মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ খেলাফত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুরের ছোট ছেলে। তিনি  হাফেজ্জী হুজুর প্রতিষ্ঠিত কামরাঙ্গীর চর জামেয়া নূরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল, কাওরান বাজার আম্বরশাহ শাহী জামে মসজিদে ২৫ বছর খতিব এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমিরে শরীয়তের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশ-বিদেশে ইসলামের নামে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি খোলামেলা কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিম্নরূপ : 


নয়া দিগন্ত : বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগ উঠেছে এবং তারা ইসলামের নাম ব্যবহার করছে বলে জানা যাচ্ছে। ইসলামকে ব্যবহার করে উগ্রপন্থা, চরমপন্থা অবলম্বনের কোনো অবকাশ আছে কি ?

মাওলানা আতাউল্লাহ: ‘জঙ্গি’ ফারসি শব্দ। জং থেকে এসেছে। জং মানে যুদ্ধ। আর জঙ্গি বলা হয় যোদ্ধাকে। ইসলামের নামে জঙ্গিকে যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে ওটা হলো জঙ্গি অর্থ সন্ত্রাসী। ফারসি অর্থের দিকে তাকিয়ে জঙ্গি শব্দের অর্থ নেয়া হলে তো আমাদের মিলিটারিরা যে ট্রেনিং নিচ্ছে, যারা যুদ্ধকৌশল শিখছে, সবচেয়ে বড় যোদ্ধা তো তারা। আসলে জঙ্গি বলে ইসলামের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে; কিন্তু ইসলামে জঙ্গি-সন্ত্রাসের কোনো সুযোগ নেই। ইসলামে এগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই। এক জায়গায় আক্রমণ করল, কয়েকজন লোককে হত্যা করল, গলা কেটে মারল এটা দিয়ে কী হবে? আসলে ইসলামকে দুর্নাম করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এগুলো করা হচ্ছে। ইসলাম কি এভাবেই প্রসার লাভ করেছে? ইসলামের ইতিহাস দেখলে এগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। মানুষ হত্যা করে বোমাবাজি করে অন্যায়ভাবে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কখনো ইসলাম প্রসার লাভ করেনি। রাসূলের সা: মক্কী জিন্দিগীতে তিনি কিভাবে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে ইসলামের কাজ করেছেন, তিনি সেখানে সারাক্ষণ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কিন্তু কখনো তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেননি। নির্যাতিত হতে হতে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যখন সহ্যের বাইরে চলে গেছেন তখন আল্লাহর কাছে তিনি ফরিয়াদ করেছেন। আল্লাহ হিজরতের আদেশ দিয়েছেন। তিনি মদিনায় চলে গেছেন। মদিনায় যাওয়ার পর মদিনাবাসীও তার অনুসারী হয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ইহুদিদের সাথেও একটা সন্ধি হয়েছিল। যখন সেখানে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হয়ে গেল তখন মক্কা থেকে কিছু লোক মদিনায় আক্রমণ করার জন্য আবার আসছে তখন আল্লাহর হুকুমে তিনি তাদের ওপর আক্রমণের জন্য নয়, মদিনাকে রক্ষা এবং নিজেদের রক্ষার জন্য তাদেরকে তৎপরতা থেকে থামানোর জন্য  মদিনার বাইরে গিয়ে তিনি যুদ্ধ করলেন। 


নয়া দিগন্ত : যারা এসব করছে তারা তো ইসলামকে রক্ষার জন্য করছে বলছে এবং এই বিশ্বাস নিয়েই করছে বলে বাহ্যদৃষ্টিতে তারা দেখাচ্ছে।

মাওলানা আতাউল্লাহ : তাদের এই ধরনের শুধু বিশ্বাস থাকলেই তো হবে না। রাসূলের সা: জীবনী থেকে, কুরআন হাদিস থেকে এই জিনিসগুলো বুঝতে হবে। রাসূলের জীবনী ও কুরআন হাদিসে কোথাও এভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মানুষ হত্যা করে, প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা পাওয়া যায় না। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় উত্তম জ্ঞান এবং হেকমত বা কৌশলের সাথে ইসলামের প্রচার প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। বরং যারা খুন, হত্যা, ফাসাদ ইত্যাদি সৃষ্টি করতে চায় তাদের ব্যাপারে কঠোর শাস্তির কথা কুরআনের মধ্যেই আছে। যারা ইসলামিসমাজকে,  মুসলমানদের সমাজকে নষ্ট করতে চায়, অশান্ত  করতে চায় তাদের ব্যাপারে জেলের হুকুম আছে। এগুলো নিয়ে তাদের সংশোধন করা না গেলে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করারও নির্দেশ আছে। কারণ যারা আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশনা না মেনে আল্লাহ ও রাসূলের নাম করেই সমাজে অশান্তি সৃষ্টিকারী কিছু করে সেটা অবশ্যই ফেতনা ফাসাদই হবে। তারা যদি ইসলামি স্লোগানও দেয় সেগুলো হবে ইসলামকে দুর্নাম করার ষড়যন্ত্র।


নয়া দিগন্ত : তরুণরা জিহাদের নামে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ার কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?

মাওলানা আতাউল্লাহ : মুসলিম তরুণদের মধ্যে তারুণ্যের জজবা থাকে। তারা এসব কথা শুনে থাকে যে, জিহাদ করে বাঁচলে গাজী, মরলে শহীদ। এগুলো শুনে তাদের মধ্যে প্রেরণা জাগে। কিন্তু ইসলামের সঠিক শিক্ষা না থাকার কারণে আসলে তারা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যায়। কোনটা আসলে জিহাদ কোনটা জিহাদ নয় এটার মধ্যে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। অমুসলিমদের ষড়যন্ত্রেরও শিকার হয়ে যায় তারা। অমুসলিমরা যখন ইসলামের নাম নিয়ে এসব স্লোগান দেয় তখন মুসলিম তরুণরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটাকে যাচাইবাছাই করার মতো ক্ষমতা অনেকের মধ্যে নেই। 


নয়া দিগন্ত : এ পর্যন্ত যত তরুণ এসব কাজে ধরা পড়েছে বা মারা গিয়েছে সেগুলোর সাথে মাদরাসার কি কোনো সম্পর্ক আছে  

মাওলানা আতাউল্লাহ : আগে দুই-চারজন ছিল কিন্তু তারা অন্যভাবে ছিল। যেমন- মুফতি হান্নানসহ যাদের কথা বলা হয় তাদের কার্যকলাপকেও আলেম ওলামারা সমর্থন দেননি। তারা ভুলপথে চলছিল। আর এখন যা আসছে সবই তো স্কুল কলেজের ছেলেপেলে তরুণ। মাদরাসার ছাত্র একটাও নেই। তারা কিছু সময় তাবলিগ জামাতের সাথে সময় লাগায়, কিছু আলেম ওলামার সোহবতে বসে এই সোহবতের কারণে ইসলামের কথা শুনে জিহাদের কথা শুনে ইসলামের কিছু প্রেরণা তাদের অন্তরের মধ্যে লালন করে। এই সুযোগে তাদেরকে যখন কেউ টার্গেট করে তখন তারা অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে গিয়ে ওই ভুলপথে পা বাড়ায়। এই তরুণদেরকে যারা গোপনে সুসংগঠিত করে সন্ত্রাসী কাজগুলো ইসলাম ও জিহাদের নামে করাচ্ছে তারা কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে, ধরা পড়ছে কিংবা মার খাচ্ছে এই তরুণরাই। প্রাথমিক শিক্ষা দিয়েই তরুণদেরকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। আসলে যারা এই মূল  তৎপরতা চালাচ্ছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।


নয়া দিগন্ত : আপনার কথা অনুযায়ী এই ‘আসল’ তৎপরতা পরিচালনাকারী কারা? তারাই বা কেন এসব তৎপরতা চালাচ্ছে?

মাওলানা আতাউল্লাহ : আমি মনে করি এগুলো ইহুদি চক্রের ষড়যন্ত্র। এই অপতৎপরতা সারা দুনিয়ার মধ্যে। সারা  দুনিয়ায় এই ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে ইসলামকে জঙ্গিবাদ ও জঙ্গি ধর্ম হিসেবে সমাজের কাজে চিহ্নিত করার চেষ্টায় তারা লেগে আছে। মুসলমান বললেই যাতে দুনিয়ার মানুষ বলে যে তারা জঙ্গি, তারা সন্ত্রাসী। মুসলিমসমাজকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে দেবে না। বলতে পারেন, ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা, জাপানসহ অন্যান্য দেশেও সন্ত্রাসী তৎপরতা হচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে সেসব দেশেও কিন্তু দিন দিন মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে। সেখানেও মুসলমাদেরকে যাতে নিশ্চিহ্ন করা যায় সেই পরিকল্পনা নিয়ে তারা কাজ করছে।

আজকে কত বছর থেকে ইহুদিরা ফিলিস্তিনের ওপর আক্রমণ করে যাচ্ছে। একেবারে তাদের ঘরবাড়ি দখল করাসহ তাদের শিশুদেরকে পর্যন্ত তারা নিশ্চিহ্ন করছে। আমেরিকা-ইহুদিদের এ জন্য কোনো আফসোস নেই। এখানে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না। আফগানিস্তান, কাশ্মীরেও এ রকম হচ্ছে। এখানে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না। এটাই তো বড় প্রমাণ এরাই দুনিয়ার মধ্যে আশান্তি সৃষ্টি করছে। এখানে এমনও আছে যে, আপনি কোনো দিন চিন্তাও করতে পারবেন না এ লোক অমুসলিম। ইহুদিদের মধ্যে আলেমও আছে। তারা ছদ্মবেশে মুসলমান সেজেও মুসলিম তরুণদের বিভ্রান্ত করে বলে শোনা যায়। তবে বাংলাদেশে যা হচ্ছে তার সাথে আন্তর্জাতিক কোন সংগঠনের সম্পর্ক আছে কি না এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই।


নয়া দিগন্ত : এই আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে মুক্তির উপায় কী?

মাওলানা আতাউল্লাহ : সবচেয়ে বড় পন্থা হলো ইসলামি শিক্ষাকে ব্যবহার করা। ইসলামি শিক্ষাকে যদি স্কুল কলেজে ব্যবহার করা হয় তাহলে আমাদের তরুণরা ইসলাম সম্পর্কে অবহিত হবে তখন তাদের বিভ্রান্ত করা কঠিন হবে। তখন বুঝতে পারবে তাদের জীবনের মূল্য কতটুকু। এই জীবনটা ক্ষণস্থায়ী হলেও অনেক মূল্যবান। তখন তারা এত মূল্যবান জিনিসটা একজনের ভাসাভাসা কথার পেছনে পড়ে শেষ করবে না। এই ইসলামি শিক্ষাকে যদি ব্যাপক করা হয় তখন এসব অপতৎপরতা এবং ষড়যন্ত্র সব কিছু ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। ইসলামি শিক্ষাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার কাজটি সরকারকেই করতে হবে। আলেম ওলামারা তো তাদের পর্যায়ে সব কিছু করছে। আলেম-ওলামা যদি না করতেন তাহলে পরিস্থিতি হয়তো অনেক আগেই আরো খারাপ হতে পারত। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে মুসলমানদের স্বার্থে এমনকি দেশ-জাতির স্বার্থেই এটা করতে হবে সরকারকে। আমি ভাসাভাসা যতই চেষ্টা করি না কেন গোড়ায় যদি না যাই তাহলে তো হবে না। কিন্তু আমরা সরকারের কাছ থেকে উল্টো জিনিস পাচ্ছি। সরকার তো ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতি দিয়ে ইসলামের যে ধ্যানধারণা কিছুটা ছিল  সেটাও দূর করে দিলো। সরকারকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যারা যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু তাদের মেরে ফেললে তো হবে না। আটক করে তাদের কাছ থেকে তথ্য নিক। তা ছাড়া সন্দেহ করে মারলে তাতে নিরীহ লোকওতো থাকতে পারে। এখানে আমার সন্দেহ হলো আমি সব মেরে ফেললাম, কী পেলাম? সেখান থেকে কিছু বের করতে পারলাম না - এভাবে করলে তো কিছুই নির্মূল হবে না। নিরীহ মানুষও শিকার হতে পারে। এগুলোর দ্বারা সমস্যা আরো বাড়তে পারে। তাদের জিদ বাড়তে পারে। এই সন্ত্রাস দূর করার জন্য, নির্মূল করার জন্য কুরআনে যে ফর্মুলা আল্লাহ দিয়েছেন এটা নিয়ে তো আলেম-ওলামা সব সময় কাজ করছেন। তার ফলাফল আমরা পাচ্ছি। সরকারের আইন এসব অপকর্ম থেকে সমাজকে সেভাবে বিরত রাখতে পারবে না। আল্লাহর আইন সমাজকে এসব অপকর্ম থেকে বিরত রাখতে পারবে। আলেম-ওলামার পরামর্শ নিয়ে সরকার এসব কর্মকাণ্ড করলে বেশি কামিয়াব হবে। সন্দেহ করে জঙ্গি দমনের কাজ করলে কিন্তু সুফল আসবে না। ভালোভাবে তাহকিক করে তারপর কাজ করতে হবে। না হয় এক দিকে সরকার টিপ দেবে আবার ১০ দিক দিয়ে সেটা বের হবে। একটা ছিদ্র বন্ধ করবে ১০টা ছিদ্র বের  হয়ে যাবে।


নয়া দিগন্ত : বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে বা কি পরিস্থিতি দাঁড়াতে পারে বলে আপনি আশঙ্কা করছেন?

মাওলানা আতাউল্লাহ : আমি মনে করি বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনো সেভাবে খারাপ পর্যায়ে যায়নি। এটার লাগাম টেনে ধরার জন্য সরকারকে কাজ করতে হবে। সরকার এ জন্য শুধু অভিযান চালালেই হবে না। এ ক্ষেত্রে  আলেমদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করে সরকারকে পরামর্শ নিতে হবে। না হয় এ দেশ আফগানিস্তানের পরিণতি ভোগ করার দিকে আগাবে। তখন আমেরিকা বা অন্য দেশ এখানে আসার সুযোগ সৃষ্টি হবে। যেটা আমাদের কারো জন্যই মঙ্গল হবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা হয়তো সেটাই যাচ্ছে। এটাকে মাথায় রেখে জাতীয়ভাবে এই সমস্যা মোকাবেলার কৌশল নিয়ে আগাতে হবে।


নয়া দিগন্ত : মসজিদে নজরদারির সিদ্ধান্ত এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জুমার খুতবা তৈরি করে বিতরণ করার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন

মাওলানা আতাউল্লাহ : সরকারকে তো সারা দেশেই নজরদারি রাখতে হবে। কিন্তু বিশেষভাবে  মসজিদে খতিবদের নজরদারির যে ঘোষণা সরকার দিয়েছে তাতে আলেমদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আর আতঙ্কের ফলাফলও শুরু হয়ে গেছে। তাদের খুতবা না পড়ার কারণে কোনো কোনো আলেমকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খুতবা থেকে জঙ্গিবাদের উসকানি হয় এই ধারণাটাই তো ঠিক না। যদি বলা হয় খতিবরা জিহাদের কথা বলে কি না সেটা নজরদারি করবে তাহলে তো হবে না। জিহাদের কথা তো কুরআনের অনেক জায়গায় আছে। এই সব আয়াতের ব্যাখ্যা দিলে কি জঙ্গি হয়ে যাবেন? ইসলামি বই পেলেই অনেকটা খারাপ অর্থে বলা হচ্ছে ‘জিহাদি বই’। এটা তো অন্যায় কাজ। এটা সরকার করুক বা সরকারি লোক করুন। জিহাদ আর সন্ত্রাস এক জিনিস না। আত্মরক্ষামূলক, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার নাম হচ্ছে জিহাদ। এটার সাথে সন্ত্রাসের তো কোনো সম্পর্ক নেই। জিহাদের সবচেয়ে বড় বই হলো কুরআন। সরকার যদি এটা বলে তাহলে তো কুরআনও রাখা যাবে না। এই ধরনের কথাবার্তা বলা তো ঠিক না। জিহাদি বই পড়া, পুস্তকাদি রাখা এটা তো ঈমানের দাবি। ইসলামের প্রচার প্রসারের জন্য চেষ্টা করাটাও তো জিহাদের অংশ। ইসলামের ইতিহাসেইতো আমরা জিহাদের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাই।

এখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যে খুতবা দেয়া হয়েছে। সেটাতে যেমন ভুল আছে তেমনি এমনভাবে সেখানে লেখা হয়েছে তাতে মনে হয় যত সন্ত্রাসী কাজ হয় শুধু মুসলমানদের কাছ থেকে। মুসলমানরা সন্ত্রাসী নাকিআসলে এই ধরনের কোনো খুতবারই দরকার নেই। আমরা খতিবরা এমনিতেই ফেতনা ফাসাদের বিষয়ে তার চেয়েও বেশি বলে থাকি।

নয়া দিগন্ত : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

মাওলানা আতাউল্লাহ : আপনাকেও ।

Monday, June 20, 2016

“অপরাধ মুক্ত রাষ্ট্র গঠনে কোরআনের বিধান প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য” শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিল, ঢাকা মহানগরী খেলাফতের

১১ই রমজান  মোতাবেক ১৭ই জুন ২০১৬ গত  শুক্রবার বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে রাজধানীর হোটেল ইম্পেরিয়ালের কনভেনশন সেন্টাতে "অপরাধ মুক্ত রাষ্ট্র গঠনে ক্বোরানের বিধান প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য" শীর্ষক আলোচনাসভা এবং ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।


ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর বলেন, আত্মশুদ্ধি, সাম্য, সহমর্মিতা ও মানবীয় গুনাবলী সৃষ্টির উদাত্ত আহবান নিয়েই রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র রমজান আমাদের কাছে এসেছিল। মুসলিম জাতীয় ঐতিহ্য চেতনায় এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনে রমজান অতি গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাস পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস, ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাস, বিজয়ের মাস। মুসলমানের দ্বীন ও দুনিয়ার সমৃদ্ধি, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক উন্নতি, দৈহিক ও মানবিক শ্রেষ্ঠত্ব আর গৌরব ও মর্যাদার অবিস্মরণীয় স্মৃতি বয়ে নিয়ে আসে মাহে রমজান। তিনি অপরাধমুক্ত আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোরআনের বিধান ও রাসূল সা. এর আদর্শে রাষ্ট্র পরিচালিত হলে দেশে খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ঘুষ-দূর্নীতি, লুঠপাট ও জুলুম নির্যাতনসহ কোনো ধরনের অপরাধ থাকবে না। তখনই সত্যিকারের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশে আবার সোনালী যুগ ফিরে আসবে।




সংগঠনের ঢাকা মহানগর আমীর ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা আবু তাহেরের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক জনাব আলহাজ্ব আলমগীর মহিউদ্দীন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ জাফরুল্লাহ খান, খেলাফতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা শেখ গোলাম আসগর, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন, ইসলামী বুদ্ধিজীবি ফ্রন্টের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হান্নান আল হাদী, খাদেমুল ইসলাম জামাআতের সেক্রেটারী জেনারেল মো: নাজমুল হক, খেলাফত নেতা হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, মুহাম্মদ আজম খান, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজি, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতী আব্দুর রহীম কাসেমী প্রমুখ।


মাওলানা আব্দুল লতিফ নিজামী বলেন, একটা বৃহত্তর নীলনকশার অংশ হিসেবে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষানীতি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পালিত ধর্মের বিপক্ষে এবং একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর অনুকূলে প্রণীত। 



নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলহাজ্ব আলমগীর মহিউদ্দীন বলেন, বৃটিশরা এদেশে মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিভক্ত করে দিয়ে আমাদেরকে দুর্বল করে দিয়েছে। আমাদেরকে সাধারণ শিক্ষা এবং ইসলামী শিক্ষার সমন্বয় করতে হবে। অপরাধ মুক্ত করতে হলে নৈতিকতা সৃষ্টি করা অপরিহার্য। নৈতিকতা সৃষ্টিতে ধর্ম বিশেষ করে ইসলামে ভুমিকা সবচেয়ে বেশি।


ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেন, জঙ্গি দমন অভিযানের নামে সারাদেশ থেকে অনেক সাধারণ নিরীহ মানুষ গ্রেফতার হচ্ছে। এতে জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অভিযানে নিরীহ মানুষও হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এধরণের ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দেশে অব্যাহত হত্যাকান্ড চলছে। এতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পুলিশ অফিসারের স্ত্রীসহ বিভিন্ন পেশার নারী ও পুরুষ হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো হত্যাকা-ের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার হয়নি। তারপরও খুনের দায় বিরোধীদের উপর চাপিয়ে প্রকৃত দোষীদের আড়াল করা হচ্ছে। এসব হত্যাকান্ডের পেছনের মূল শক্তি চিহ্নিত হচ্ছে না ফলে হত্যাকান্ড ঘটেই চলছে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন,   বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা রানা দাশ গুপ্ত ও অভিনেতা পীযুষ বন্দোপধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর হস্তক্ষেপ কামনা করে দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এ হস্তক্ষেপ কামনার অর্থ বাংলাদেশে ভারতের আগ্রাসন চালানো। এমনি পরিস্থিতিতে রামকৃঞ্চ মিশনের ধর্মগুরুকে হত্যার হুমকির সাথে বাংলাদেশেী হিন্দুদের সুরক্ষার হস্তক্ষেপ কামনার সাথে যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করি। এ লক্ষ্যে ভারতীয় আগ্রাসন উসকিয়ে দিতে এ উগ্রপন্থি সংগঠনের কেউ রামকৃঞ্চ মিশনের পুরোহিতকে হত্যার হুমকি দিয়ে থাকতে পারে। সাম্রাজ্যবাদের দালাল রাষ্ট্রদ্রোহী এ উগ্র সংগঠনের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।