Powered By Blogger

Wednesday, May 16, 2012

মহাজোট সরকারের ৩ বছরে ইসলাম, মানবতা, দেশ ও গণস্বার্থবিরোধী শতাধিক কর্মকাণ্ডের শ্বেতপত্র প্রকাশ উপলক্ষে খেলাফত আন্দোলন-এর সংবাদ সম্মেলন

-সরকারের ইসলাম ও গণস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে


- ধর্মাপরাধীরা যুদ্ধাপরাধীদের চেয়েও মারাত্মক, কিন্তু ধর্মাপরাধীদের বিচারের কোনো নাম-নিশানাও নেই


-পবিত্র কোরআনের বিরুদ্ধে ‘নারীনীতি’ প্রবর্তন, ধর্মীয় শিক্ষাকে বিলুপ্ত, মাদরাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা


- ইসলামী বিধি-বিধান, মুসলিম জাতিসত্তা ও ইসলামী রীতিনীতি, তাহজিব, তামাদ্দুন মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র


- বাংলাদেশে বিদেশী সৈন্য এবং বিদেশী গোয়েন্দাদের উপস্থিতিতে মানুষ শঙ্কিত ও ভীত


- গুম, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার ইত্যাদি নিত্যদিনের সংবাদে গোটা জাতি আতঙ্কিত


- বারবার বিদ্যুত্, তেল, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে জনগণ অতিষ্ট


- চট্টগ্রামের নন্দীরহাটে  ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ ও মন্দির উভয়টির ক্ষতিপূরণ এবং গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি   


বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমিরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ, ধর্মভীরু, ওলি আল্লাহদের দেশ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, মানবতার দেশ ও শান্তির দেশ। কিন্তু বর্তমান সরকারের ইসলাম, মানবতা ও গণস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। সংবিধান থেকে ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বাদ দিয়ে কুফরি মতবাদ ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। অথচ গত ৩৩ বছর সংবিধানে ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বিদ্যমান থাকায় দেশের ক্ষতি হয়েছে তার কোনো প্রমাণ নেই। সীমান্ত, টিপাইমুখ বাঁধসহ বাংলাদেশে বিদেশী সৈন্য এবং বিদেশী গোয়েন্দাদের উপস্থিতিতে মানুষ শঙ্কিত ও ভীত। গুম, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার ইত্যাদি নিত্যদিনের সংবাদে গোটা জাতি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বারবার বিদ্যুত্, তেল, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মহাজোট সরকারের ৩ বছরে ইসলাম, মানবতা, দেশ ও গণস্বার্থবিরোধী শতাধিক কর্মকাণ্ডের শ্বেতপত্র প্রকাশ উপলক্ষে খেলাফত আন্দোলন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির আলহাজ আনিসুর রহমান জিন্নাহ, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন প্রমুখ।

মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ আরও বলেন, ধর্মাপরাধীরা যুদ্ধাপরাধীদের চেয়েও মারাত্মক, কিন্তু ধর্মাপরাধীদের বিচারের কোনো নাম-নিশানাও নেই। ধর্মাপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণে সারাদেশে নাস্তিক, মুরতাদ ও বাম রাম বাবুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অনেকে নামে মুসলমান বটে, কিন্তু মূলত মুসলমান নয়, এরা কোনো দল বা গোষ্ঠীর এজেন্ট এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী মুরতাদ। তাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।

তিনি বলেন, যে সরকার পবিত্র কোরআনের বিরুদ্ধে ‘নারীনীতি’ প্রবর্তন, ধর্মীয় শিক্ষাকে বিলুপ্ত, মাদরাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা, ইসলামী বিধি-বিধান, মুসলিম জাতিসত্তা ও ইসলামী রীতিনীতি, তাহজিব, তামাদ্দুন মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে, আল্লাহ-রাসুল, কোরআন ও কাবা শরীফের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের বিচার করে না; বরং নিরাপদ আশ্রয়ে রাখে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, সে সরকারের কোনো ধরনের সহযোগিতা করা মুসলমানদের জন্যে জায়েজ হবে না। পার্থিব স্বার্থের বিনিময়ে আখেরাত জলাঞ্জলি দেয়া সুস্থ বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ নয়।

মাওলানা আশরাফ চট্টগ্রামের নন্দীরহাটে সৃষ্ট ঘটনায় ‘প্রথম হামলাকারী ও উস্কানিদাতা কারা’—এটা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে নির্ণয় করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া, ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ ও মন্দির উভয়টির ক্ষতিপূরণ এবং গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। সরকারকে সব ভুল সংশোধন করে তওবা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক মেঘে শীত যায় না জনগণ আগামীতে হাতে তাসবিহ, মাথায় পট্টি দেখলেই ভোট দেবে না। যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস সংবিধানের মূল স্তম্ভ হিসেবে পুনঃস্থাপন করবে ও সে হিসেবে দেশ চালাবে এবং সরকারে আলেম-ওলামাদের অংশীদার বানাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেবে। নারী নীতিমালা-২০১০ বাতিল করে মহান আল্লাহর প্রদত্ত নারীর অধিকার সংরক্ষণ, শিক্ষানীতি/২০১০ বাতিল করে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করবে এবং কওমী মাদরাসা শিক্ষার যথাযথ স্বীকৃতি দেবে, দলীয় সন্ত্রাস, সরকারি সন্ত্রাস বন্ধ করে ন্যায়-নীতি ও ইনসাফের বিচার প্রতিষ্ঠার ওয়াদা দেবে, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে, তাঁবেদারি করবে না, সংখ্যালঘুদের সমঅধিকার প্রদান করবে, কিন্তু মাথায় উঠাবে না—তাদের ভোট দেবেন। তিনি বলেন, খেলাফত যুব আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ ফরিদুল ইসলাম গত ১ এপ্রিল নিখোঁজ হয়েছেন। পুলিশ, ডিবি, র্যাব কেউই তার সন্ধান দিতে পারেনি।

খেলাফত প্রধান হজরত হাফেজ্জী হুজুরের (রহ.) অনুসৃত নীতিতে কলেমায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী, মুসলমানদের শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানো সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মতো ঐক্যের সিসাঢালা প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে এবং তাগুতি শক্তি ও শয়তানি চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রের মূলোত্পাটন করতে হবে।